স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুদিন আগে ঘোষণা করেছিলেন, ঢাকা নগরী থেকে রিক্সা উচ্ছেদ করা হবে। কিছুদিন আগে নতুন করে ঢাকার আরও কয়েকটি রাস্তায় রিক্সা চলাচল হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রতিবাদে রিক্সা চালকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে আসে। পুলিশ বাধা দেয় এবং মিছিলের উপর হামলা চালায়। ফলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়, ভাংচুর হয় এবং অনেকে আহত ও গ্রেফতার হয়। অবশ্য প্রায় সবগুলো সংবাদপত্রে ‘রিক্সা চালকদের তাণ্ডব’ হিসেবেই সংবাদ প্রকাশিত হয়। ধনিকদের পার্টি বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বা শেয়ার বাজারে যখন এমন ঘটনা ঘটে তখন তাদেরকে এত ঘৃণা বর্ষণ করতে দেখা যায় না।
‘ছোটলোকদের’ সম্পর্কে ‘বড়লোকদের’ এমনি মনভাব নতুন কোন ঘটনা নয়। রিক্সা শ্রমিক, গার্মেন্ট শ্রমিক, বস্তিবাসী বা মেহনতী গরিব মানুষ যখন শোষণ নির্যাতনে অতিষ্ঠ ও নিরুপায় হয়ে রাস্তায় নেমে আসে, শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে তখন ঐসব ‘ভদ্রলোকেরা’ নিষ্ঠুর নির্যাতন, শোষণ ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের কোন নিন্দা জানায় না। অধিকাংশ সময় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের উপর পুলিশী বা সন্ত্রাসী হামলার ফলেই আন্দোলনকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং ভাংচুর হামলা এসব ঘটনা ঘটে। আর একটা বিষয় মনে রাখা দরকার রিক্সা বা গার্মেন্ট শ্রমিকদের ওই সব মিছিল অধিকাংশ সময় তাৎক্ষণিক ও স্বতঃস্ফূর্ত। প্রায় সবক্ষেত্রেই এদের কোন প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব নেই। অথবা নেতৃত্ব গড়ে উঠতে দেয়া হয়নি। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার বলতে বাস্তবে কিছু নেই। মালিক বা সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে কিছু দালাল সংগঠন আছে বটে কিন্তু তাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেক সময় ঐসব দালাল নেতৃত্বের হুমকি সন্ত্রাস মোকাবেলা করেই শ্রমিকরা মিছিলে নামে। প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব না থাকায় এসব মিছিলে শৃঙ্খলা রক্ষা করা বেশ কঠিন। এছাড়া উস্কানীদাতারা সবখানেই থাকে। আমাদের দেশে বহু ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু আজকাল গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনকে বা মিছিলে কখনও কখনও যে বিশৃঙ্খলা দেখা যায় তা অতীতে অন্যান্য শ্রমিক আন্দোলনকে কদাচিৎ দেখা গেছে। এর কারণ হচ্ছে গার্মেন্টে মালিক, সরকার পুলিশ মিলে কোন ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে উঠতে দিচ্ছে না। কাজেই বাংলাদেশে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিক্ষোভ যুগের ‘লুডাইট’ আন্দোলনের রূপ নেয়।পাকিস্তান আমলে আমরা দেখেছি যখনই সামরিক শাসন জারি হয়েছে তখনই যানজট দূর করার জন্য রিক্সা লাইন ধরে লেফ্ট রাইট করাবার চেষ্টা হয়েছে। এর ফলে যানজট বেড়ে যাওয়ায় রিক্সা চালকদের বেধরক মারপিট এবং শেষ তক্ রিক্সা উচ্ছেদ করার উদ্যোগ দিতে দেখেছি। রিক্সা উচ্ছেদ, হকার উচ্ছেদ, বস্তি উচ্ছেদ এগুলো হচ্ছে সরকারের রুটিন কাজ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও প্রায় সব সরকারেরই কমবেশি এই উচ্ছেদ জ্বরের বিকার উঠেছে।
যানজট সমস্যা সারা দেশে থাকলেও রাজধানী ঢাকা শহরে এটা গুরুতর সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। এটি একটি জাতীয় সমস্যা এবং এজেন্ডায় পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে যানজট সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গটি প্রথম সারিতে চলে এসেছে।
যানজট সমাধানের জন্য দেশি-বিদেশি অর্থে অনেক বড় বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে হোটেল সোনারগাঁও থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন স্থানে সেমিনার সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কোটি কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। রাস্তার মাঝখানে আইল্যান্ড, রাউন্ড, এ্যাবাউট বার বার পরিবর্তন করা হয়েছে। রং বেরং রোড ডিভাইডার লাগানো হচ্ছে। আবার ক’দিন পরে পাল্টানো হচ্ছে। এটাই মনে হচ্ছে দিন বদল। বহু টাকা খরচ করে আধুনিক সিগনালিং সিস্টেম। স্বয়ং ট্রাফিক পুলিশই ঐ সিগনাল মানে না। সবুজ বাতি দেখালেও তাকে হাত তুলে রাস্তা বন্ধ করতে হয় কারণ অন্য রাস্তাটিতে গাড়ির লাইন অনেক বড় হয়ে গেছে।
যানজট কমাতে বিভিন্ন সরকার অনেক বড় বড় প্রজেক্টের কথা বলছেন। বলা হচ্ছে ফ্লাইওভার, আন্ডার পাস, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মেট্রো রেল, শাটল ট্রেন, বৈদ্যুতিক ট্রেন মায় ম্যাগনেটিক ট্রেন, মাস ট্রান্জিট এমনি নানা গালভরা পরিকল্পনার কথা। এগুলো শুনলে আমাদের আশা জাগে অচিরেই আমাদের দেশ একটি আধুনিক ও উন্নত দেশ হিসেবে রূপান্তরিত হবে। ভাবতে কার না ভাল লাগে। কিন্তু কোথা থেকে এত টাকা আসবে, এত গাড়ির জন্য জ্বালানি কোথা থেকে পাব, এসবের সামাজিক প্রতিক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে যেন কোন চিন্তা নেই।
সরকার, ধনিক শ্রেণী, নব্য ধনিক, বাড়িওয়ালা গাড়িওয়ালারা অনেকেই দিন বদলের স্বপ্ন দেখেন। ঢাকা একটি আধুনিক ও উন্নত নগরীতে পরিণত হবে। “দারিদ্র্য যাদুঘরে স্থান পাবে”। রিক্সা থাকবে না। হকার থাকবে না। শহরে কোন বস্তি থাকবে না। মনধরা, প্রাণহরা সিটি। থাকবে শহর জুরে। ঝক্ঝকা বাড়ি, ঝক্ঝকা বিদেশি গাড়ি। লক্কর ঝক্কর বাস ও গাড়ি থাকবে না। থাকবে না কোন যানজট। উন্নয়ন বলতে এমনি ভাবনা অনেকেরই।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্লোগান দিয়েছিলেন ‘গরিবী হটাও’। স্লোগানটাতো ভালোই ছিল। কিন্তু বাস্তবে যা ঘটেছিল তা হচ্ছে গরিব হটাও। যে গরিবরা দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত নিঃস্ব হয়ে নিরুপায় হয়ে দিল্লী শহরে এসেছিল তাদেরকে হটিয়ে দেয়া। তার গুনধর আধুনিক পুত্র সঞ্জয় গান্ধী বস্তি উচ্ছেদ, গরিব মানুষ যাতে সন্তান জন্ম দিতে না পারে সে জন্য বন্ধ্যাকরণের কাজ শুরু করেছিল। এসবের ফলে সৃষ্ট গরিব মানুষের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত কয়েক যুগের নেহরু পরিবারের রাজত্বের অবসান ঘটান হয়েছিল।
এর আগের মেয়াদে শেখ হাসিনার সরকার বস্তি উচ্ছেদে উঠে পরে লেগেছিল। হাইকোর্ট বিকল্প বাসস্থান ছাড়া বস্তি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে রায় দিলে আওয়ামী লীগ তার বিরুদ্ধে লাঠি মিছিল করে। যারা বস্তি উচ্ছেদের বিপক্ষে ছিল তাদের বিরুদ্ধে নানা কটুক্তি করে এবং হুমকি দেয়।
অনেকেই সত্যি সত্যিই মনে করেন যে যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে রিক্সা। অনিয়ন্ত্রিত রিক্সা যানজটের কারণ বটে। তবে এটা একমাত্র বা প্রধান কারণ নয়। তাই যদি হতো তাহলে গুলশান বনানী বা ভিআইপি রোডগুলোতে যেখানে রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ সেখানে কেন ভয়াবহ যানজট!
আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় যানজট নিয়ে সরকার যখনই চিন্তা-ভাবনা করেছে তখনই শেষমেশ টার্গেট হয়েছে রিক্সা। ফলে যানজটের বহুবিধ কারণগুলো দূর করার জন্য পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে।
আধুনিক ও দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে পারস্পরিক সম্পর্ক ও নির্ভরশীলতা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। যানজট সমস্যাও অন্যান্য অনেক সমস্যার সাথে জড়িত। এর সাথে অর্থনীতি, নগরায়ন, নগর পরিকল্পনা, কর্মসংস্থান, জনসংখ্যা, পরিবেশ নানা বিষয়ের যোগসূত্র আছে। যত দোষ নন্দ ঘোষ। গরিবের ঘারে সব দোষ চাপে। রিক্সা হটাও সব ঠিক হয়ে যাবে।
বব গ্যালাঘার ১৯৭৮ সাল থেকে দশ বছর বুয়েটে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে রিক্সার উপর গবেষণালব্ধ একটি বই প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখান হয়েছে রিক্সার বিরুদ্ধে যে প্রচারণা চলে তা সত্য নয়। রিক্সা অনেক কম জায়গা নেয়। অন্য গাড়ির তুলনায় মোড় ঘুরতে তাদের জায়গা লাগে অনেক কম। কারের যাত্রী রিক্সা যাত্রীর তুলনায় ৫০% বেশি জায়গা নেয়। বাসের তুলনায় ৫ থেকে ১০ গুণ জায়গা নেয়। রিক্সার জন্য কোন বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় না। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। শুধু রিক্সা চালক নয়, রিক্সার মিস্ত্রী, মেরামত, যন্ত্রাংশ উৎপাদন, গ্যারেজ, মালিকানা হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ছোট্ট দোকানদার, বস্তিমালিক এসব মিলে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়, আয় উপার্জনের ব্যবস্থা হয়। তাদের উপর নির্ভরশীল পরিবার পরিজনের কথা একবার ভাবুন। রিক্সা পরিবেশ বা শব্দ দূষণ করে। সাধারণ মানুষ, নিম্নবিত্ত মানুষের পরিবহণের জন্য রিক্সা। যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন তারা কি একবারও ভাবেন রিক্সা উচ্ছেদের কী ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। যে উন্নয়ন মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটায় না, মানুষের জীবনে অভিশাপ ডেকে আনে তাকে কীভাবে উন্নয়ন বলা চলে? উন্নয়ন তো শুধু ধনিদের জন্য নয়!
উন্নত বিশ্বের দিকে তাকাই যেসব দেশে তাদের ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, এলিভেটেড হাইওয়ে আছে, কিন্তু যানজট সমস্যার সমাধান করতে পারেনি তারা। আমরাও ভাবছি ম্যাজিক ঘটে যাবে না, হবে না। যে হারে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তার চেয়ে অনেক দ্রুত যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। শহর বাড়ছে, যানজট বাড়ছে।
আসলে যানজট সমস্যা সামগ্রিকতায় তা দেখলে সমাধান হবে না। আসল কথা বলতে হয়, আমাদের উন্নয়ন ধারাই পাল্টাতে হবে। আমাদের মাথায় আধুনিক উন্নয়নের ইউরোপিয় মডেল চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সে উন্নয়ন পশ্চিমে কী পরিস্থিতির ও সংকটের সৃষ্টি করেছে তা সকলেই দেখতে পারছি। সেসব দেশে এখন সাস্টেইনবেল বা টেকসই উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। পরিবেশ বিধ্বংসী নয়, পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন ধারার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ধনিক শ্রেণীর “মানুষ এবং প্রকৃতির আগে মুনাফা” এই মনোবৃত্তির জন্য সে পথে এগুনো যাচ্ছে না। তথাকথিত উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমরা পাশ্চাত্য উন্নয়ন ধারায় অনেক পিছিয়ে আছি। আমার অবশ্য মনে হয় সেটা একদিক দিয়ে আশীর্বাদও বটে। আমরা ভিন্নভাবে ভাবতে পারি। আমরা অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে নগরায়নের পরিবর্তে গ্রামায়ণের পথে যেতে পারি। ফোন, ফ্যাক্স, ই-মেইল, ইন্টারনেট, মোবাইল প্রভৃতি আধুনিক প্রযুক্তির দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে টাউন প্ল্যানিং এবং কমিউনিটি প্ল্যানিং এর মাধ্যমে আমরা যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে আনতে পারি।
আমরা সড়ক পরিবহনকে বেশি প্রাধান্য দেই। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পুঁজি, ব্যবসায়িক স্বার্থে সড়ক পথকেই অগ্রাধিকার দেই। নদীমাতৃক দেশ বিবেচনায় আমাদের দেশে নৌ পরিবহনকে প্রাধান্য দেয়া উচিত। এতে খরচ কম।
প্রতি লিটার তেলে সড়ক পরিবহনে ২৫ টন, রেলে ৮৪ টন এবং নৌ পথে ২১৭ টন মালামাল বহন করা যায়। নদীগুলো নাব্য করতে ড্রেজিং করলে, শাসন করলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ হয়, সেচের সুবিধা হয়, মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি পায়, দূষণ কমে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পায় এবং পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হয়।
যানজট দূর করতে বিশাল সব প্রজেক্ট নেয়া হচ্ছে। কিন্তু ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপ নিতে পারলে সমস্যা অনেক কমানো যায়। রাস্তা দখল মুক্ত করতে হবে, সম্পূর্ণ রাস্তা ব্যবহারযোগ্য করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করতে হবে। ট্রাফিক আইন ও নিয়ন্ত্রণ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। শুধু ঢাকা শহরেই নাকি প্রতিদিন ২০/২৫টি প্রাইভেট কার রাস্তায় নামছে। আমার মনে হয় আপাততঃ প্রাইভেট কার আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা দরকার। বড় বড় বাস যান পরিবহন ব্যাপকভাবে চালু করা দরকার। ঢাকা এবং আশপাশে শাটল ট্রেন চালু করা দরকার। সিগনালে যখন সামনে লাল বাতি জ্বলে তখন বায়ের রাস্তা খোলা থাকলে ও অন্য গাড়ি সে রাস্তা বন্ধ করে রাখে এর ফলেও যানজট হয়। রিক্সার উপরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়া রিক্সা যাতে চলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এসব ছোট ছোট পদক্ষেপ নিয়েও আমরা যানজট অনেকটা কমিয়ে আনতে পারি। কিছুদিন দেখেছিলাম পুলিশের একটা টিম যেখানে যানজট হয়েছে সেখানে ছুটে গিয়ে দক্ষতার সাথে জট ছাড়িয়ে দিচ্ছে। এরকম শক্তিশালী ও দক্ষ টিম গোটা শহর ঘুরতে পারে। এরা রাস্তা দখলমুক্ত করবে, রাস্তায় রাখা নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে দেবে, অবৈধভাবে পার্ক করা গাড়ি তুলে নেবে। মালিবাগ মোড়ের কাছে এসবি অফিসের সামনেই ব্যস্ত এবং প্রধান রাস্তায় কয়েক ডজন পুলিশের অচল গাড়ি রাস্তা অচল করে রেখেছে। সমস্যা হচ্ছে এসব করতে গেলে রিক্সা চালক নয় যে শ্রেণী ক্ষমতায় আছে তাদের উপর আঘাত করবে। সরকার আত্মঘাতী হয় কী করে!
‘আধুনিক’ ও ‘ডিজিটাল’ বাংলাদেশের ‘উন্নয়নের’ বলি হবে রিক্সা শ্রমিক, বস্তিবাসী, মেহনতী ও সাধারণ মানুষ। দেশের শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের উপর যে শোষণ নির্যাতন চলছে যে পর্বত পরিমান ধন বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে, বেকারত্ব, দারিদ্র্য যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তাতে মেহনতী ও দুস্থ মানুষ ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। রেহমান সোবহান পাকিস্তান ও পূর্ব বাংলায় দুই অর্থনীতির কথা বলেছিলেন। আজ বাংলাদেশেই দুই ভাগ। ভিআইপি ও মেহনতী সাধারণ মানুষের বাংলাদেশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন